ভূমিকা
আমরা প্রতিদিন স্কুল, কলেজ, অফিস, বাজার বা যেকোনো সামাজিক পরিবেশে চলাফেরা করি, কথা বলি, নানা কাজে অংশ নিই। কিন্তু অনেক সময় কিছু সাধারণ ভুল আমরা নিয়মিত করে থাকি যা আমাদের সামাজিক ভাবমূর্তি, সম্পর্ক কিংবা পেশাগত দক্ষতাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে। আজকের পোস্টে আমরা আলোচনা করব বাংলাদেশিদের দৈনন্দিন জীবনের চলাফেরা ও কথাবার্তায় ঘটে যাওয়া ১৬টি কমন মিসটেক বা সাধারণ ভুল নিয়ে।
১. অন্যের কথা না শুনে নিজের কথা চাপিয়ে দেওয়া
অনেকেই কথা বলার সময় অন্যের কথা না শুনেই নিজের মতামত চাপিয়ে দেন। এটি একটি অসভ্যতা এবং সম্পর্ক নষ্টের কারণ হতে পারে।
২. ‘আপনি’ এর জায়গায় ‘তুমি’ ব্যবহার করা
অফিস বা সমাজে অপরিচিত বা বয়োজ্যেষ্ঠ কাউকে ‘তুমি’ বলা অনেক সময় অসম্মানজনক শোনায়।
৩. পাবলিক প্লেসে জোরে কথা বলা বা ফোনে চিৎকার করা
বাস, ট্রেন, অফিস, হসপিটাল, লাইব্রেরি ইত্যাদি জায়গায় চুপচাপ থাকার শিষ্টাচার মানা উচিত। কিন্তু অনেকেই ফোনে জোরে কথা বলেন, যা বিরক্তিকর।
৪. সঠিকভাবে ধন্যবাদ ও দুঃখিত বলা না শেখা
আমাদের সমাজে অনেকেই ‘Thanks’ বা ‘Sorry’ বলাকে দুর্বলতা মনে করেন, যা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা।
৫. লাইনে দাঁড়ানো না শেখা
ব্যাংক, টিকিট কাউন্টার, বাস স্ট্যান্ড— এসব জায়গায় আমরা অনেকেই লাইন না মেনে ঢুকে পড়ি, যা বিশৃঙ্খলার জন্ম দেয়।
৬. অপিচার বা শিক্ষককে সময় মতো সম্মান না দেখানো
অফিসে সিনিয়রদের সালাম না দেওয়া বা শিক্ষকদের অবহেলা করা একজন ব্যক্তির ভদ্রতা ও শালীনতার অভাব প্রকাশ করে।
৭. অজান্তে বা ইচ্ছাকৃতভাবে সময় নষ্ট করা
অনেকেই মিটিং, ক্লাস বা অফিসে সময় নষ্ট করেন অপ্রয়োজনীয় কথা বলে। এটি শুধু নিজেরই নয়, অন্যদের সময়ের অপচয়ও ঘটায়।
৮. সামাজিক যোগাযোগে অশোভন মন্তব্য করা
ফেসবুক বা ইউটিউবে অনেকে নেতিবাচক মন্তব্য করেন, যা ব্যক্তিত্বহীনতা ও সমাজবিরোধী আচরণের পরিচায়ক।
৯. পথচারীদের জায়গা দখল করে যানবাহন রাখা
ফুটপাতে বাইক বা ভ্যান রেখে পথচারীদের চলাচলে বাধা তৈরি করা খুবই সাধারণ কিন্তু দুঃখজনক একটি ভুল।
১০. অজান্তেই গালি দেওয়া বা খারাপ শব্দ ব্যবহার করা
অনেক সময় রাগের মাথায় বা অভ্যাসবশত মানুষ খারাপ শব্দ ব্যবহার করেন, যা একজন শিক্ষিত ও ভদ্র মানুষকে অযোগ্য করে তোলে।
১১. কথা বলার সময় চোখে চোখ না রাখা
সচরাচর দেখা যায়, কেউ কথা বলার সময় অন্যদিকে তাকিয়ে থাকেন। এটি আত্মবিশ্বাসহীনতার পরিচায়ক।
১২. মিটিংয়ে মোবাইল অফ না রাখা
মিটিং বা ক্লাস চলাকালীন মোবাইল অফ না রাখা একটি বড় অসভ্যতা। এতে অন্যরা বিরক্ত হয়।
১৩. ভুল তথ্য ছড়ানো বা গুজব বিশ্বাস করা
অনেকে যাচাই না করেই ফেক নিউজ বা গুজব শেয়ার করেন, যা সমাজে বিভ্রান্তি ছড়ায়।
১৪. নিজের ভুল স্বীকার না করা
ভুল করেও অনেকে দোষ স্বীকার করেন না বা দোষ অন্যের ওপর চাপিয়ে দেন। এটি আত্মউন্নতির পথে বাধা হয়ে দাঁড়ায়।
১৫.শিক্ষককে সঠিক সম্মান না দেওয়া
ইদানিং ছাত্র-ছাত্রীরা যেনো শিক্ষক সন্মান করতে ভুলেই গিয়েছে। শিক্ষককে অসম্মান করে কথা বার্তা বলে। আর প্রাইভেট শিক্ষককেতো বর্তমান ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষকই মনে করে না। এর ফলে আমাদের সমাজ হয়ে উঠছে বিয়াদবের একটা একটা ডাস্টবিন।
১৬. পরিবেশ নোংরা করা
চিপস বা কাগজের প্যাকেট রাস্তায় ফেলে দেওয়া, খোলা জায়গায় থুথু ফেলা— এসব অভ্যাস আমাদের সমাজকে অস্বাস্থ্যকর করে তোলে।
উপসংহার
আমরা যদি আমাদের দৈনন্দিন জীবনে এসব কমন মিসটেক এড়িয়ে চলতে পারি, তাহলে আমরা সবাই মিলে আরও সুন্দর, শৃঙ্খলাপূর্ণ ও ভদ্র সমাজ গড়ে তুলতে পারি। ছোট ছোট সচেতনতা বড় পরিবর্তনের পথ খুলে দেয়।
আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না!
আপনি এই তালিকার কোন কোন ভুল নিজের জীবনে দেখেছেন বা এখনো করেন? নিচের কমেন্টে জানাতে পারেন।
1 মন্তব্যসমূহ
ভবিষ্যতে এই সব কমন মিস্টেক গুলো বাদ দেয়ার চেষ্টা করবো,
উত্তরমুছুনইন্শাল্লাহ।
শুভ মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ! অনুগ্রহ করে ভদ্রভাষা ব্যবহার করুন এবং প্রশ্ন থাকলে নির্দ্বিধায় লিখুন।